iran-israel-war_1749916279.jpg

ইরান ইসরাইল যুদ্ধের সর্বশেষ আপডেট খবর ও ক্ষয়ক্ষতি ২০২৫

ইরান ইসরাইল যুদ্ধের কারণঃ

১২ জুন ২০২৫ – ইসরায়েলের প্রথম বিমান হামলা।
কেন হামলার পক্ষে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে কথা বলছিলেন, কেন এখন তাঁর সময় এসেছে, এসব প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।

অভিযান শুরুর পর দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, এ হামলা ছিল ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়।

বহু বছর ধরে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করে আসছেন, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারলে ইসরায়েলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। এই হুমকির তাৎক্ষণিকতা বোঝাতে গিয়ে এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা সম্প্রতি জানিয়েছেন, ইরানের কাছে এত পরিমাণ ইউরেনিয়াম আছে যে তারা কয়েক দিনের মধ্যেই অন্তত ১৫টি পারমাণুবিক বোমা তৈরি করতে পারবে।

তবে হামলার পেছনে ভিন্ন আরেকটি কৌশলগত পটভূমিও থাকতে পারে।

তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান আলোচনা রোববার ষষ্ঠ দফায় প্রবেশ করতে যাচ্ছিল। আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে পরস্পরবিরোধী বার্তা আসছিল।

উগ্রবাদী নেতানিয়াহুর কাছে এটি হয়তো এক নির্ধারণী মুহূর্ত বলে মনে হয়েছে। তাঁর দৃষ্টিতে, একেবারে শুরুতেই ‘অগ্রহণযোগ্য’ পরমাণু চুক্তি থামিয়ে দেওয়া সম্ভব।

সামরিকভাবে নেতানিয়াহু ও তাঁর উপদেষ্টারা হয়তো মনে করছেন, ইরান এবং তার আঞ্চলিক মিত্ররা (বিশেষ করে হিজবুল্লাহ) এতটাই দুর্বল হয়েছে যে তারা আর আগের মতো গুরুতর নেই। এ কারণে ইসরায়েলিরা মনে করছেন, এখনই প্রতিপক্ষকে চেপে ধরতে হবে।

নিচে ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রধান বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো:
 ১২ জুন ২০২৫ – ইসরায়েলের প্রথম বিমান হামলা

ইসরায়েল তার পারমাণবিক ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন: ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, ও শীর্ষ সামরিক ও পরমাণু বৈজ্ঞানিকদের উপর আক্রমণ শুরু করে।

সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয় (প্রথম ধাপে প্রায় ৮০–৯০ জন) ।

টেলিগ্রাফিক ভাবনায় ইসরায়েল ঘোষণা করে, অপারেশন "Rising Lion" বহুদিন চলবে যতক্ষন না ইরানের পারমাণবিক হুমকি পুরোপুরি না নির্মূল করা হয় ।

১৩ জুন ২০২৫ – আক্রমণ তীব্রতা বৃদ্ধি

প্রায় ২০০+ লক্ষ্যবস্তুতে ‘Rising Lion’ এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ শুরু হয়, যার মধ্যে রয়েছে নাতাঞ্জ ও অন্যান্য কেন্দ্র ।

হোসেইন সালামি (IRGC প্রধান), মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাঘেরি, এবং কমপক্ষে ৬–৯ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন ।

ইরানি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও বেসিন লক্ষ্য করেই ক্যাপচারে প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রমণ চালানো হয়  ।

১৩ জুন রাত্রি – ইরানের পাল্টা হামলা শুরু

ইরান প্রতিক্রিয়া হিসেবে “Operation True Promise III (অথবা III ধাপ)” চালু করে ।

শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন (যেমন ১০০+ Arash আত্মঘাতী ড্রোন) ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হয়  ।

ইসরায়েলে ৩–৪ জন নিহত এবং ঘণাত্মকভাবে বহু আহত, ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায় ।

১৪ জুন ২০২৫ – হামলা জারি

ইরান তার হামলা তীব্র করে পাঁচ ধাপে ও আরও ক্ষেপণাস্ত্র–ড্রোন অবকাশ অনুসরণ করে ।

ইসরায়েলে এখনো আকস্মিক শত্রুতা ও বিস্ফোরণ চলছেই, বিমানবন্দর ও আকাশ পথ বন্ধ/নিয়ন্ত্রণাধীন অবস্থায় ।

সারাংশ

সময়ঘটনাবিস্তারিত
১২ জুনপ্রথম হামলাইসরায়েল শুরু করে 'Operation Rising Lion' – পারমাণবিক ও সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য।
১৩ জুনআক্রমণ তীব্রতাবহু স্থাপনা ও শীর্ষ সামরিক/বৈজ্ঞানিক নিহত।
১৩ জুন রাতইরানের পাল্টাশতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও প্রিপেয়ার্ড অপারেশন।
১৪ জুনহামলা জারিইরান ব্যালিস্টিক ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

 

সংক্ষেপে, হামলা শুরু হয়েছিল ১২ জুন ইসরায়েলের ‘Rising Lion’ অপারেশন দিয়ে, যা গত ১৩–১৪ জুন মারাত্মক মাত্রায় বাড়তে থাকে এবং এখন দুই দেশের মধ্যে সক্রিয় সামরিক সংঘর্ষ চলছে।

 

ইরান ইসরাইল যুদ্ধ আপডেট বর্তমান অবস্থা

ইসরায়েলি হামলা ও ইরানী প্রতিক্রিয়া
গত ১৩ জুন ২০২৫ তারিখে ইসরায়েল এক বৃহত্তর বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক বেস লক্ষ্য করে, যেখানে কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং ৬–৯ জন পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন ।
এর জবাবে ইরান ‘Operation Severe Punishment’-এ নাম দিয়ে সাড়ে ১৫০–২০০টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র, হুন্ড্রেড ড্রোন সিলালো ইসরায়েলের দিকে হামলা চালায় ।

ইরানীর ক্ষয়ক্ষতি ও ইসরায়েলের অবস্থা


ইরান বলছে, ইসরায়েলি হামলায় পারমাণবিক কেন্দ্র ও রকেট স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, প্রায় ১৫০ টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানেছে ।
ইসরায়েলে ইরানের প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ছেদ করেছে, তবে অন্তত ৩–৪ জন মারা গেছেন, এবং ২০০–১৫০ জনের মতো আহত হয়েছেন ।

নেতাদের বিবৃতি

ইসরায়েলি নেতারা

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইস্রায়েল কৎস:
“তেহরান পুড়ে ছারখার হবে” – তিনি সতর্ক করেছেন, যদি ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো অব্যাহত রাখে ।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু:
ইহাকে "অপরিহার্য" বলে উল্লেখ করেছেন—তাদের মাধ্যমেই জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। তিনি ইরানি জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন।

ইরানি নেতারা

সুপ্রীম লিডার আয়াতুল্লাহ খামেনি:
যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ইহা “যুদ্ধের ঘোষণা”, এবং সে অনুযায়ী প্রতিশোধ অব্যাহত থাকবে ।

বিদেশ মন্ত্রী:
বলা হয়েছে, যারা মার্কিন–ইহুদি আঁচলে ছিল তারা অনৈতিক; যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা পারমাণবিক আলোচনা “অবৈধ” ঘোষণা করেছেন ।

ইরান ইসরাইল যুদ্ধ ক্ষয়ক্ষতি সারসংক্ষেপ

পক্ষক্ষয়ক্ষতি/পরিমাণ
ইরান৬–৯ পরমাণুবিজ্ঞানী প্রাণ হারিয়েছেন; ১৫০+ স্থাপনায় আঘাত; ৭৮–৮০ জন নিহত, ৩২০+ আহত  ।
ইসরায়েল৩–৪ জন নিহত, ১৫০–২০০+ আহত; বিমানবন্দর বন্ধ, কিছু ভিত্তি ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত

 

যুদ্ধ সামগ্রিক পরিস্থিতি

দুই দেশ বর্তমানে প্রতিশোধমূলক হামলা জারি রেখেছ

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এলাকা ভিত্তিক শক্তিগুলো পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে এবং ডিঅ্যেস্ক্যলেশন চাপ প্রয়োগ করছে ।

মধ্যপ্রাচ্যে তেল ও স্বর্ণের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে; বিমানচলাচল কিছু করিডরে বাতিল হয়েছিল, তবে পরে কিছু জায়গায় পুনঃসচল হয় ।

 

ইসরায়েল–ইরান দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে—উভয়পক্ষ একে অপরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলে কিছু হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নেতারা কঠোর রণনীতি অবলম্বনের কথা বলছেন। আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে শান্তি আনার জন্য।